“শিক্ষকতা ইবাদত, তুলনামূলক চাকরি নয়” বলে মন্তব্য করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক।
দেড় শতাধিক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ-সুপারদের নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অনুষ্ঠিত ‘মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল একাডেমিক ভবনের গগণ হরকরা গ্যালারীতে ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ (আইআইইআর) এই আয়োজন করে।
অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক বলেন, “শিক্ষকতাকে অন্যান্য চাকরির সাথে তুলনা করলে হবে না। এটা একটি ভিন্ন ধরনের পেশা, এটা নবী-রাসূলের পেশা। রাসূল নিজেই বলেছেন, আমি শিক্ষকরূপে প্রেরিত হয়েছি। এটি চাকরি না মনে করে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করেন। দায়িত্বশীল হোন।”
তিনি আরো বলেন,“আমরা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে এদেশের প্রধান শিক্ষা ব্যবস্থা করতে চাই। কারণ এটি পরীক্ষিত সত্য যে এদেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক উন্নতি, সমৃদ্ধি সবকিছু নির্ভর করছে একদল সৎ, দক্ষ, যোগ্য, খোদাভীরু, আমানতদার এবং দেশপ্রেমিক কারিগরদের উপর। আর এই সব গুনের মানুষ তৈরির কারখানা হচ্ছে একমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থা এদেশে এখনো ডোমিনেট করছে। কিন্তু ঐ শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে মানুষ তৈরির কোন ব্যবস্থা নাই। ওখানে দানব তৈরি হয়। তার উদাহরণ আছে অনেক। এ দেশ থেকে ২৮ লক্ষ কোটি টাকা ইতোমধ্যে পাচার হয়েছে। ঐ পাচারের সাথে কিন্তু একজন আলেমও জড়িত ছিলেন না।”
সেমিনারে আইআইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক। বিশেষ আলোচক ছিলেন বিএমটিটিআই এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদুল হক এবং ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলী। প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.আ.ছ.ম তরীকুল ইসলাম। এছাড়াও খুলনা বিভাগের দেড় শতাধিক মাদ্রাসার তিন শতাধিক অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “বর্তমানে আলিয়া মাদ্রাসা দুটি ধারায় বিভক্ত। মাদ্রাসা বোর্ড ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। উন্নয়নের জন্য দুটি অংশকে একত্রে কাজ করতে হবে। মূল সমস্যা হলো, আধুনিকায়নের নামে আলিম পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে, যার ফলে ছাত্ররা আলিম পাশ করার পরই জীবন-জাগতিক সুযোগের আশায় ইউনিভার্সিটির দিকে চলে যায়। ফলে ফাজিল ও কামিল স্তরে পর্যাপ্ত ছাত্র থাকে না। এ অবস্থায় একটি ব্যবহারিক প্রস্তাব হলো, দাখিল পর্যন্ত ছয় বছরের কোর্সটি চার বছরে সংক্ষিপ্ত করে ভাষাশিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের আরবি ভাষায় দক্ষতা তৈরি হবে এবং আলিম পর্যায়ে তাদের মধ্যে ফিকহ, হাদিস ইত্যাদি উচ্চতর বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।”




















