ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জিম করতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২২ বছর বয়সী তরুণ ক্রিকেটার প্রিয়জিৎ ঘোষ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে বোলপুর শহরের মিশন কম্পাউন্ড এলাকায় একটি স্থানীয় জিমে শরীরচর্চা করার সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রিয়জিৎ ঘোষ নিয়মিত জিম করতেন এবং ভারতের প্রখ্যাত ক্রিকেটার বিরাট কোহলির মতো ফিট থাকতে চাইতেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শারীরিকভাবে ফিট থাকা ও পারফরম্যান্স উন্নত করাই ছিল তাঁর প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু জিমেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাবেন—এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।
প্রিয়জিৎ বোলপুরের জামবুনির বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৬ আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন তিনি। তাঁর এই অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য সিএবি’র পক্ষ থেকে পুরস্কৃতও করা হয়। বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলে একদিন ভারতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। কিন্তু অকালমৃত্যু থামিয়ে দিল সেই স্বপ্নযাত্রা।
প্রিয়জিতের আকস্মিক মৃত্যুতে বন্ধুমহল, আত্মীয়-স্বজন এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, সদ্যযৌবনে থাকা এক তরুণ, ফিটনেসপ্রিয় একজন ক্রীড়াবিদের এমনভাবে চলে যাওয়া সম্ভব!
চিকিৎসকরা বলছেন, কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কিছু বিশেষজ্ঞ এর পেছনে কোভিড-পরবর্তী শারীরিক জটিলতাকেও দায়ী করছেন। তবে প্রিয়জিৎ ছিলেন নিয়মিত শরীরচর্চায় অভ্যস্ত এবং কোনো বড় ধরনের পূর্ব-অসুস্থতার ইতিহাসও পাওয়া যায়নি। তাই কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠছে।
এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, শুধুমাত্র জিমে যাওয়া কিংবা বাহ্যিকভাবে ফিট থাকা যথেষ্ট নয়—শরীরের ভিতরের স্বাস্থ্যঝুঁকি শনাক্ত করতে সময়মতো মেডিক্যাল চেকআপ এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাও অত্যন্ত জরুরি।
প্রিয়জিৎ ঘোষের অকাল মৃত্যু শুধু একটি প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে কেড়ে নেয়নি, বরং যুবসমাজকে হৃদরোগ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
