ইসলামী বিদ্যালয়ে (ইবি) বহিরাগত কর্তৃক নির্মাণ শ্রমিক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্মাণাধীন ছাত্রীহলে এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন নির্মাণ শ্রমিক মোখলেছ ও আরমান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত হয় গত রবিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ২টার পর। ছাত্রী হল ভবনের ঢালাইয়ের কাজ চলাকালে দিকনির্দেশনা না মানায় জোগাড়ী ইমন (১৮) ও এক রাজমিস্ত্রির মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইমনের ধাক্কায় ওই মিস্ত্রি দশতলা ভবন থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলে অন্য শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইমনকে চপেটাঘাত করেন। পরবর্তীতে বিকেলে উভয় পক্ষ বসে আপোষ-মীমাংসা করেন। তবে এরই জের ধরে পরদিন সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইমন বহিরাগত ১৫-২০ জন উঠতি বয়সের যুবককে সঙ্গে নিয়ে নির্মাণ শ্রমিক মোখলেছের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আরেক শ্রমিক আরমান বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধরের শিকার হতে হয়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, হামলার সময় তাঁদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী আরমান বলেন, “বিকেলে আমরা ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় সাত-আটজন লোক রুমে ঢুকে মোখলেস চাচাকে মারতে শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারধর করে। হাতে যা পেয়েছে তাই দিয়ে আঘাত করেছে। এক পর্যায়ে ইট দিয়ে আমার পিঠে আঘাত করে। তিনি আরও বলেন, গতকালই আমি বেতন পেয়েছি। বেতনের ১৫০০ টাকাসহ আমার মানিব্যাগ নিয়ে চলে যায় তারা।
অন্য ভুক্তভোগী মোখলেস বলেন, “গতকাল যে ছেলের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল, সে একটু উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির, গাঞ্জা-মাঞ্জা খায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে এমনভাবে আমার মামাতো ভাইকে ধাক্কা দিয়েছিল যে, যদি পাশে রডগুলো না থাকত তবে সে দশতলা থেকে পড়ে যেতো। পরে আমরা ৬-৭ জন ছুটে এসে তাকে বাঁধা দিয়েছি। পরে দুই দুইবার অফিসে মিটমাট হয়েছে। মাফটাফও চাওয়া হয়েছে। তারপরও তারা আজ বিকেলে আবারও স্থানীয় লোকজন নিয়ে এসে আমার উপর হামলা চালায়। আমাকে রড দিয়ে পিটাইছে। পরে আমার ভাতিজা বাঁধা দিতে গেলে তাকেও পিটাইছে।
সাইট ম্যানেজার মাসুদ বলেন, “গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমি সাইট ম্যানেজার হিসেবে তাদের ঘটনাটা নিয়ে মিউচুয়াল করে দেই। সেখানে ওদের পক্ষ থেকে বাইরে থেকে মোটরসাইকেলে করে ২-৩ জন লোক এসেছিল। তারপরও আজকে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে তারা ১৫-২০ জন রড-বাঁশসহ দেশীয় কিছু অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করেছে। এতে তারা ২ জন আহত হয়েছে। ঝামেলার বিষয়টি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহীনুজ্জামান বলেন, আমরা গতকাল রাত আড়াইটার টার দিকে দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সেইখানে আমরা উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমাধান করে দিয়েছি। তারা পরস্পরের কাছে মাফ চেয়েছে।
