ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) ও হল সংসদ গঠনের লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র পেতে সময় লাগবে আরো একমাস। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্যবৃন্দ অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান, অধ্যাপক ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান, অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ ।
কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব গঠনতন্ত্র বিশ্লেষণ করে খসড়া প্রস্তুত করার পর ঢাকা ও চট্টগ্রামের সদস্যদের সাথে আলোচনা করা হবে। এছাড়া, ছাত্রদের সাথেও মতবিনিময় করা হবে এবং তাদের মতামত সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করা হবে ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শনিবারের মধ্যে সংগৃহীত গঠনতন্ত্রগুলো কম্পোজ করার কাজ শেষ হবে। এরপর ২২-২৪ সেপ্টেম্বর একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সদস্যদের সাথে আলোচনা করা হবে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি শেষে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত কম্পোজের কাজ শেষ করে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে খসড়া জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি করিডোরে সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইকসুর দাবিতে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ছাত্র প্রতিনিধিত্ব, সাজিদ হত্যার বিচার, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিরোধিতাকারীদের শাস্তি, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানান। পরদিন (২৩ আগস্ট) শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘মুভমেন্ট ফর ইকসু’ কমিটি গঠন করা হয়
এদিকে, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। তারা মনে করেন, ইকসু গঠন নিয়ে শিক্ষার্থীদের জোরালো আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি করছে ।
ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া, ইবি সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে ইকসুর গঠনতন্ত্র প্রণয়নে জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। তারা হুশিয়ারি দিয়েছেন যে, অতিদ্রুত গঠনতন্ত্র প্রণয়ন না করা হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ।
কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে এটা সম্ভব না। এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে। কারণ এটি একক কোনো কাজ নয়, সবাই মিলে করতে হবে” । তিনি আরও যোগ করেন, “জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো জটিলতা হবে না বলে আমি মনে করি। সরকার যদি দায়িত্বশীল থাকে তাহলে কোনো বাধা হওয়ার কথা নয়” ।
প্রসঙ্গত, ইকসু গঠনের দাবিতে গত ২৪ আগস্ট ‘মুভমেন্ট ফর ইকসু’ প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ নভেম্বরের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আশ্বাস দেন।
















