জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত “আধুনিক বিশ্বে ইসলামী দর্শনের পুনর্গঠন: সমস্যা ও সম্ভাবনা” শীর্ষক বিশেষ সেমিনারে আলোচক হিসেবে দর্শনশাস্ত্র ও সভ্যতা বিষয়ক গবেষক উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ২টায় কলা ও মানবিকী অনুষদের ১০৩ নং কক্ষে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মুনির হোসেন তালুকদারের সভাপতিত্বে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্মানির ক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন ও সভ্যতা বিষয়ক গবেষক বুরহান উদ্দিন আজাদ।
এসময় প্রধান আলোচক বুরহান উদ্দিন আজাদ বলেন, পশ্চিমা আধুনিক দর্শনে সত্য তথা ধর্মীয় মূল্যবোধ কে অস্বীকার করে শুধুমাত্র আকলের (বুদ্ধি) পৃথিবী ও প্রকৃতি সম্পর্ক জানার চেষ্টা শুরু করে এবং তার আলোকে নতুন সমাজ ব্যবস্থার রুপরেখা প্রণয়ন করে। অন্যদিকে রক্ষনশীল মুসলমানদের একাংশ যারা মনে করেন আরব সংস্কৃতির বাইরে ইসলাম বলতে কিছু নেই। দর্শন যেহেতু আকল তথা যুক্তির আলোকে বিষয় কে প্রশ্ন করে তাই দর্শন কে তারা হারাম মনে করেন। ফলে সামগ্রিক ভাবে ইসলামি দর্শন কে দ্বীনের বিপরীতে মনে করে অপ্রাসঙ্গিক করে মনে করা হয়। অথচ ইসলামি দর্শন আধুনিক সময়ে একটি পরিভাষা।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি সভ্যতার কেন্দ্রেরই মৌলিক কিছু উপাদান রয়েছে যা ঐ সভ্যতার গঠনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই মৌলিক উপাদানসমূহ দার্শনিক ও চিন্তাগত কাজকে প্রভাবিত করে থাকে। ইসলামী সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতা হলেন হযরত পয়গাম্বর (সঃ)। এই সভ্যতার মধ্যে তৈরি হওয়া সকল কিছুর সাথেই কোরআন ও সুন্নাতের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এই অর্থে দার্শনিক কর্মকাণ্ড কিংবা দার্শনিক তাফাকুরের (চিন্তা) সাথে কোরআন ও সুন্নতের সম্পর্ক রয়েছে। আর এই সভ্যতার বড় বড় দার্শনিকগণের সকলেই হলেন মুসলমান। অমুসলিম দার্শনিকগণও রয়েছেন কিন্তু কিন্দি, ফারাবী, ইবনে সিনা , ইবনে রুশদ এবং আল রাযি এরা সকলেই মুসলমান। এরা একইসাথে ঐ সময়ের বড় বড় মুতাকাল্লিমও ছিলেন।
সেমিনাটিতে অতিথি হিসেবে অধ্যাপক মঞ্জুর এলাহী বলেন, ইসলামী চিন্তা ও জ্ঞানের ধারাসমূহকে বিভিন্ন দর্শনচর্চার ঐতিহ্যগুলো বর্তমানেও কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী সভ্যতায় দর্শনের বিকাশ এবং বিশ্বসভ্যতায় ইসলামী দর্শনের অসামান্য অবদান ও প্রভাবের প্রতি আলোকপাত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী ও দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহ।
এছাড়াও সেমিনার উপস্থিত ছিলেন ইসলামী চিন্তা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান আল ফিরদাউস, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইন্সটিটিউটের সেক্রেটারিয়েট সদস্য আব্দুল হামিদ আল জাবেদ।
পরিশেষে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব ও সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেমিনারের কার্যক্রম শেষ হয়।





















