ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’র আয়োজনে মেহেদি ও নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন সংগঠনটি।
দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসবকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে পুরো এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছিল রঙিন উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব ঝুলন্ত সাজসজ্জা, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য সংস্কৃতির উপস্থাপন দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। প্রকৌশল অফিসসংলগ্ন অভয়ারণ্যের বাগানে উৎপাদিত মেহেদি পাতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে মেহেদি আর্ট, কলকা ও আলতা দেয় অভয়ারণ্যের সদস্যরা। পাশেই নবান্ন উৎসবে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় শীতের ঐতিহ্যবাহী নানা পিঠা ঘুরের পায়েস, পাটিসাপটা, নকশি, বাঁধাকপির পিঠা, তেজপাতার পিঠাসহ মুখরোচক আরও বিভিন্ন পদ।
দর্শনার্থী শিক্ষার্থী ফাতিমা খাতুন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময় ই ব্যতিক্রম। আজকের মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায় সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি এরকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।
আয়োজক অভয়ারণ্যের সহ-সভাপতি মেরিনা সুলতানা বলেন, “আমরা গত বছরও মেহেদি উৎসব আয়োজন করেছিলাম আমাদের মেহেদি উদ্যান থেকে মেহেদি এনে। সেই মেহেদি বেটে আমরা অর্গানিক মেহেদি দিচ্ছি। সেটা আমরা হাতে লাগাচ্ছি। গত বছর আমরা প্রচুর সাড়া পেয়েছি বিধায় এই বছরও আমরা সেটা রেখেছি। আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে আলপনা। বাঙালি সংস্কৃতির আসলে সব দিকগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অভয়ারণ্য চেষ্টা করে আমরা বাঙালি সংস্কৃতিগুলোকে তুলে ধরার। সেখান থেকে আলপনা রাখা, অর্গানিক মেহেদি রাখা। আর নবান্ন উৎসবটা আমরা প্রথমবারের মতো আয়োজন করছি। অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন উৎসবটা আয়োজন করা হয়, কিন্তু সংস্কৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে এবং কখনো আমাদের ক্যাম্পাসে ওরকম করে এটা আয়োজন করা হয়নি। তো আমরা এবার নবান্ন উৎসবটা আয়োজন করেছি।
সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসব আয়োজন করেছি। একসময় মেয়েদের হাতে নিয়মিত মেহেদির রঙ দেখা যেত, কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে সে চর্চা কমে গেছে। সেই ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ। তাছাড়া আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, তা সংগঠনটির নিজস্বভাবে রোপণ করা গাছ থেকে সংগ্রহ করা—এর মধ্য দিয়ে আমরা প্রাকৃতিকতা ও শুদ্ধতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই।”
উল্লেখ্য, আয়োজনে ফটোগ্রাফি পার্টনার হিসেবে ছিলো ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি।




















