ঢাকা ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
Logo ব্যাডমিন্টন প্রতিভার খোঁজে ব্যাডমিন্টন বাংলাদেশ Logo ওসমান হাদীকে জঙ্গি বললেন যবিপ্রবির ছাত্রলীগ নেতা Logo ‘হাদী খাইছে, তোরও খাওয়ার সময় এসে গেছে’, আসিফকে ইবি ছাত্রলীগ নেতার হুমকি Logo ওসমান হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo ‘গুলিবিদ্ধ হাদী ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’ শ্লোগানে উত্তাল ইবি Logo ওসমান হাদীর হত্যাচেষ্টায় জবির নারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল Logo ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কবি নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo ওসমান হাদীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo দেশে নতুন মাদক এমডিএমবি জব্দ, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪ Logo জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় জাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সন্তোষ প্রকাশ

বাকৃবিতে ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন

বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০২৪-২৫ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখা।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের আয়োজন করে শাখা শিবির।

অনুষ্ঠানে শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রহুল আমিন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জোফার মো. মোসলেহ উদ্দিন, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো মশিউর রহমান, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শরীফ মাহমুদ প্রমুখ।

নবীনবরণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র খেলার মাঠে ফুল ও ব্যানার দিয়ে বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে বিছানো হয়েছে লাল গালিচা। ছবি তোলার জন্য বানানো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সদৃশ্য বিশেষ স্থান। শিক্ষার্থীদের মতামত ও পরামর্শ নিতে বসিয়েছে ‘ছাত্রশিবির নিয়ে ভাবনা বোর্ড’।

এইদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই নবীন শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। নবীন বরণে শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় ব্যাগ, টিশার্ট, প্যাড, বই, কলমদানী ও চাবির রিং উপহার দেয়া হয়। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন সেক্টর ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল শিবিরের সাবেক নেতারা এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিকের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে মাঝে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশ করে ইঙ্গিত সংসদের শিল্পীরা।

কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে। ইসলাম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে যারা কাজ করবে, শিবির তাদের সহযোগিতা করবে কিন্তু কখনও লেজুড়বৃত্তি করবে না। এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না। এখন আর জোর করে মিছিলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলারও সাহস কেউ পাবে না, ৫ আগস্টে এর কবর রচনা হয়ে গেছে।

অমুসলিম ও নারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীদের বিষয়ে শিবিরের বিরুদ্ধে একটা শ্রেনির যে প্রোপাগান্ডা, সেটি তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার, যার কোন ভিত্তি নেই। অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের উদারনীতির সঙ্গে শিবির একমত এবং সেটিই ধারণ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির নামে কলকাতার সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমরা চাই আমরা আমাদের আত্মপরিচয় ও আত্মসম্মানের সংস্কৃতি চর্চা করতে। আমরা আমাদের স্বকীয়তা বুঝতে শিখেছি, নিজের সক্ষমতা বুঝতে শিখেছি। এটা বুঝেই আমরা ঠিক করবো কার সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করব।’

দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে শিবিরের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রশিবির ইতোমধ্যে ৩০ দফা শিক্ষা প্রস্তাবনা দিয়েছে। সরকার এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষা, গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব।

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭৭ সালে শিবির প্রতিষ্ঠার হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করে চলেছে। যতই বাধা বিপত্তি আসুক না কেন কখনও কার্যক্রম চলমান থাকবে। গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদী আমলেও শিবিরে ধারাবাহিকতা একদিনের জন্য থেমে থাকেনি। কারণ। এই কাফেলা থাকতে জানে না। আমি নবীন শিক্ষার্থীদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি, ভবিষ্যৎ জীবনে শিবিরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক শরিফল মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে যে জিনিসটার সংকট তৈরি হয়েছে তা হলো মানবতা সংকট, নৈতিকতার সংকট। পৃথিবীর বাস্তবতায় আমাদের সকলকে হয়ে উঠতে হবে মানবিক মানুষ হিসেবে। গত ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পতনের পর শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে ইনোভেটিভ ও ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

সমাপনী বক্তব্যে শাখা সভাপতি আবু নাসির ত্বোহা বলেন, ‘বাকৃবি পরিবারে আগত নবীন শিক্ষার্থীরা সত্যিই সৌভাগ্যবান। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর আমরা আবারও এই আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরেছি। এই আয়োজনে আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। দেশের কৃষি সেক্টরকে সামনে এগিয়ে নিতে নবীনদের সামনে আসতে হবে। সৎ, দক্ষ ও চরিত্রবান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে জাতির আমূল পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

জনপ্রিয়

ব্যাডমিন্টন প্রতিভার খোঁজে ব্যাডমিন্টন বাংলাদেশ

বাকৃবিতে ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন

প্রকাশিত ১১:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০২৪-২৫ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখা।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের আয়োজন করে শাখা শিবির।

অনুষ্ঠানে শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রহুল আমিন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জোফার মো. মোসলেহ উদ্দিন, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো মশিউর রহমান, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শরীফ মাহমুদ প্রমুখ।

নবীনবরণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র খেলার মাঠে ফুল ও ব্যানার দিয়ে বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে বিছানো হয়েছে লাল গালিচা। ছবি তোলার জন্য বানানো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সদৃশ্য বিশেষ স্থান। শিক্ষার্থীদের মতামত ও পরামর্শ নিতে বসিয়েছে ‘ছাত্রশিবির নিয়ে ভাবনা বোর্ড’।

এইদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই নবীন শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। নবীন বরণে শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় ব্যাগ, টিশার্ট, প্যাড, বই, কলমদানী ও চাবির রিং উপহার দেয়া হয়। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন সেক্টর ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল শিবিরের সাবেক নেতারা এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিকের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে মাঝে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশ করে ইঙ্গিত সংসদের শিল্পীরা।

কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে। ইসলাম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে যারা কাজ করবে, শিবির তাদের সহযোগিতা করবে কিন্তু কখনও লেজুড়বৃত্তি করবে না। এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না। এখন আর জোর করে মিছিলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলারও সাহস কেউ পাবে না, ৫ আগস্টে এর কবর রচনা হয়ে গেছে।

অমুসলিম ও নারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীদের বিষয়ে শিবিরের বিরুদ্ধে একটা শ্রেনির যে প্রোপাগান্ডা, সেটি তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার, যার কোন ভিত্তি নেই। অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের উদারনীতির সঙ্গে শিবির একমত এবং সেটিই ধারণ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির নামে কলকাতার সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমরা চাই আমরা আমাদের আত্মপরিচয় ও আত্মসম্মানের সংস্কৃতি চর্চা করতে। আমরা আমাদের স্বকীয়তা বুঝতে শিখেছি, নিজের সক্ষমতা বুঝতে শিখেছি। এটা বুঝেই আমরা ঠিক করবো কার সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করব।’

দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে শিবিরের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রশিবির ইতোমধ্যে ৩০ দফা শিক্ষা প্রস্তাবনা দিয়েছে। সরকার এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষা, গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব।

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭৭ সালে শিবির প্রতিষ্ঠার হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করে চলেছে। যতই বাধা বিপত্তি আসুক না কেন কখনও কার্যক্রম চলমান থাকবে। গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদী আমলেও শিবিরে ধারাবাহিকতা একদিনের জন্য থেমে থাকেনি। কারণ। এই কাফেলা থাকতে জানে না। আমি নবীন শিক্ষার্থীদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি, ভবিষ্যৎ জীবনে শিবিরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক শরিফল মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে যে জিনিসটার সংকট তৈরি হয়েছে তা হলো মানবতা সংকট, নৈতিকতার সংকট। পৃথিবীর বাস্তবতায় আমাদের সকলকে হয়ে উঠতে হবে মানবিক মানুষ হিসেবে। গত ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পতনের পর শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে ইনোভেটিভ ও ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

সমাপনী বক্তব্যে শাখা সভাপতি আবু নাসির ত্বোহা বলেন, ‘বাকৃবি পরিবারে আগত নবীন শিক্ষার্থীরা সত্যিই সৌভাগ্যবান। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর আমরা আবারও এই আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরেছি। এই আয়োজনে আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। দেশের কৃষি সেক্টরকে সামনে এগিয়ে নিতে নবীনদের সামনে আসতে হবে। সৎ, দক্ষ ও চরিত্রবান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে জাতির আমূল পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।