জুলাই আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়ামোড় থেকে মিছিলটি বের করা হয়। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে সমবেত হন তারা। সমাবেশ শেষে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন, ইসলামী ছাত্রআন্দোলন, আইইউসানসসহ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মিছিলে ‘হাদী ভাই, আহত কেন ইন্টেরিম জবাব চাই,’ ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ,’ ‘গুলিবিদ্ধ হাদী ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই,’ ‘আমার সোনার বাংলায়, সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই,’ ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার,’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘দল শিবির জনতা, গড়ে তোল একতা,’ ‘জামাত-বিএনপি জনতা,’ ‘গড়ে তোল একতা,’ ‘ওসমান হাদীর কারণে, ভয় করি না মরনে,’ ‘লীগ ধর জেলে ভর,’ ‘সন্ত্রাসীরা দেখে যা, রাজপথে তোর বাপেরা,’ ‘হাদী ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না, সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “ ওসমান হাদীর ওপর হামলা কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীন ও ন্যায্য নির্বাচনের বিরুদ্ধে এক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। যদি প্রশাসন ও রাষ্ট্র জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের দায়িত্ব ছেড়ে জনগণের কাতারে নেমে আসা উচিত।”
আইইউসানসের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল্লাহ শেখ বলেন,“ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদীর ওপর বারবার হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সরকার তাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হাদী ভাইয়ের শরীর থেকে যে রক্ত ঝরেছে, তা বৃথা যাবে না, আমরা সেই রক্তের বদলা নেব।”
ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, “এ সন্ত্রাসী হামলা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ন্যায্য মানবিক অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। মতের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু হামলা করে কাউকে দমন করা যায় না। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবি করছি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আহ্বায়ক এস এম সুইট বলেন, “ওসমান হাদীর ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলা এক বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে তারা দেশের গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে চায়। প্রশাসনকে বলতে চাই, যদি হামলাকারীদের বিচার না হয়, তাহলে ছাত্র সমাজ আর নীরব থাকবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”
ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, “জুলাই আন্দোলনের পর থেকে এই গণমানুষের আন্দোলনকে ধ্বংস করতে বারবার ষড়যন্ত্র করছে। যারা জুলাই আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তারা এদেশের শত্রু। জুলাইয়ের সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। ওসমান হাদীর মতো একজন যোদ্ধাকে গুলি করা মানে স্বাধীনতার আদর্শে গুলি চালানো। আমরা সেই গুলির জবাব রাজপথেই দেবো।”




















