ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক, জুলাই বিরোধী যোদ্ধা শহীদ ওসমান হাদীর স্মরণে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গেয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যাল (ইবি) মিউজিক এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তাদের এই আয়োজনে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তাজমিন রহমান লিখেন, “ইবিতে হাদী ভাইকে কোন গান, নাচ, মুরাল উৎসর্গ এর প্রয়োজন নাই। পারলে দোয়া উৎসর্গ করবেন। তার জন্যে এখন এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।”
আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, “একটা মানুষের মৃত্যুর চব্বিশ ঘন্টা পার না হতেই আবলামি শুরু হয়ে গেছে। শৈশব থেকে কৈশোর ওসমান হাদী ভাইয়ের সংস্পর্শে থাকায় ভাইয়ের কালচারাল দৃষ্টিভঙ্গি একটু হলেও অনুধাবন করতে পারি। মানুষের মৃত্যুতে গান গেয়ে স্মরণ করা কলকাতার পৌত্তলিক সাংস্কৃতি। নাচ, গানের মাধ্যমে তাকে স্মরণ করা – এসব কখনোই তিনি প্রশ্রয় দিতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন গোষ্ঠী এতোদিন ভারতীয় সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে?
বিপ্লবী ওসমান হাদী ভাইয়ের বাংলাদেশ পন্থী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লড়াইকে কোনো মুখোশধারী দালালদের কাছে ইজারা দেয়া হবে না। যারা এই ভন্ডদের প্রশ্রয় দিবে তাদেরকে বয়কট করুন। ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাযায় আসুন, খু|নীদের বিচারের দাবিতে লড়াই করুন, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন।”
মাল্টিমিডিয়া এন্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী শান্ত শিশির লিখেন, “এইসব কু-সংস্কৃতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। একজন মানুষ মারা গেছে, আর কোথাকার কোন সুশীল চলে আসছে গিটার বাজিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। বিকৃত মানসিকতা নিজের মধ্যেই থাক, হাদি ভাই যেই সংস্কৃতি ভাঙতে চেয়েছে সেটা আর কখনোই আমরা ফিরিয়ে আনতে দেবো না। আপনি যতই বলেন বোকাচন্দ্রদের ব্রেইন হাটুতে। বাট নিউজে সারা দেশ কিন্তু ঠিকই দেখবে, গিটার বাজিয়ে শহিদ হাদিকে স্মরণ করলো একগুচ্ছ আ*বাল ইবিয়ান।”
আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন লিখেন, “এইসব বস্তাপঁচা ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইনসাফ ও বাংলাদেশ পন্থী সংস্কৃতি বিনির্মানের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
যারা হাদির মৃত্যুতে ভারতীয় হেজিমনি প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এদেরকে ইবি শিক্ষার্থীরা চিনে রাখুক।”
সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাইফ লিখেন, “একজন মুসলিমের মৃত্যুতে গিটার বাজানো শুধু বেমানান নয়, বরং এটি আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে সরাসরি আঘাত এবং মৃত ব্যক্তির আত্মার প্রতি চরম অবমাননা। আমরা এটি কোনোভাবেই মেনে নেব না। দয়া করে এই অপসংস্কৃতি বন্ধ করুন এবং ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির সম্মান বজায় রাখার ব্যবস্থা করুন। আমাদের প্রশাসন যদি আজ বেঁচে থাকতেন তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেন।
আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তানভীর লিখেন, “ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী শহীদ হাদী ভাই কোনো বিনোদনের বিষয় নন। এই বিষয়টা আমাদের সবাইকে মাথায় রাখতে হবে । গান সংস্কৃতি চলবে সংস্কৃতির জায়গায় আমাদের কোন আপত্তি ও নাই তবে এটা অন্যান্য ক্ষেত্রে কিন্তু হাদী ভাইয়ের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদা। তাঁর নাম ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হলে তা হতে হবে শালীনতা, দায়িত্ববোধ, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মর্যাদার সঙ্গে। গিটার বাজিয়ে গান গাওয়ার মতো উপস্থাপনা শহীদের স্মৃতির গভীরতার সঙ্গে এত বড় ভন্ডামি করার সাহস আপনারা কিভাবে পান । ভাইকে নিয়ে যারা সুশীলতা দেখাতে আসবে তাদের জন্য কথা একটাই, Loud and Clear ~সুশীলদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না।”



















