২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১২ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
এসময় শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ বিভাগের স্বাতন্ত্রতা বজায় রেখে আরবি জানাআর শর্ত স্বাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তির দাবি জানান। অপরদিকে কোন শর্ত ছাড়া গুচ্ছের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানায় আরেক পক্ষ।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিভাগটিতে শতভাগ আরবী এবং ফিকহ জানা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হত । সেসময় ভর্তি পরীক্ষায় আল-ফিকহ সম্পর্কে আলাদা ২০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো। পরবর্তীতে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রাশিদ আসকারীর সময়ে এই ধারা পরিবর্তন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ টি এবং অন্যান্যদের জন্য ৪০ টি আসন নির্ধারণ করে দেয়। দুই শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত এ ধারা থাকলেও পরে এ নিয়মও পরিবর্তন করে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছের অধীনে নেয়ার কারণে আরবী বা ফিকহ না জানলেও ভর্তি হতে পারেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ রমজানের ছুটির আগে শেষ কার্যদিবসে বিভাগের এক একাডেমিক কমিটির সভায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ধর্মতত্ত্বের (ডি-ইউনিট) অধীনে নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এরই জের ধরে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গুচ্ছের অধীনে নেয়ার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের একাংশ।
এসময় তাদের পক্ষে জারিফ তাজওয়ার বলেন, “ জুলাই বিপ্লবের পরে আমরা বিভাগের সংস্কারের জন্য ১৭ দফা দাবি দিয়েছিলাম। তারা সেই দাবি না মেনে বিভাগের প্রতি পরীক্ষা ধর্মতত্ত্বের অধীনে নেয়ার নতুন ফন্দি এঁটেছে। আমরা চাই আইন অনুষদের অন্য দুটি বিভাগ যেভাবে ছাত্র ভর্তি করে আল-ফিকহ বিভাগেও ঠিক একইভাবে ভর্তি করা হোক। এক্ষেত্রে আরবী জানার কোন শর্ত দেয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে বিভাগের আরবী জানার শর্ত স্বাপেক্ষে ভর্তির পক্ষে থাকা সালেহ আহমদ বলেন, এল ফিকহ ইসলামী শরীয়তের একটি গুরুত্বূর্ণ বিভাগ। ফিকহের গ্রন্থগুলো আরবীতে হওয়ায় আরবি না জানলে ফিকহের বিষয়গুলি ভালোভাবে জানা প্রায় অসম্ভব। এজন্য এল ফিকহ এন্ড লিগাল স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে পূর্বে আরবি জানার শর্ত ছিল। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এই শর্তকে বাদ দিয়ে বিভাগের স্বকীয়তাকে নষ্ট করা হয়েছে। আমরা চাই ৫ আগস্ট পরবর্তী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট সরকারের করা নিয়মকে বাদ দিয়ে আরবি জানা থাকার শর্তে এই বিভাগে ভর্তির সুযোগ দেয়া হোক।
বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. নাছির উদ্দীন বলেন, শর্ত পূরণ করার স্বার্থে ধর্মতত্ত্ব অনুষদ ভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার মানে এই নয় যে আমরা ধর্মতত্ত্ব অনুষদে চলে যাচ্ছি। মানবিক অনুষদের একটি বিভাগও এই অনুষদের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তবে অনেকেই বুঝতে না পেরে বিষয় টি অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেটা কাম্য নয়। এদিকে আমরা বিভাগের নামটি পরিবর্তন নিয়েও কাজ চলমান, সেশনজট নিরসনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
