জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সংস্কারের স্বার্থে মানোন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার ও বিশেষ পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বরাবর স্মারকলিপিটি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে জাকসু নেতৃবৃন্দ মানোন্নয়ন নীতিমালাকে আরও নমনীয় ও বাস্তবায়নমুখী করা এবং অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় ফলাফল প্রকাশের আগেই মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানায়।
জাকসু নেতৃবৃন্দ জানায়, বিষয়টি আগামী ১২ নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সম্ভাব্য সভায় উত্থাপনের অনুরোধ করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, শিক্ষার্থীদের অধিকার, একাডেমিক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার দাবিতে জাকসু নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
জাকসুর শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আবু উবায়দা উসামা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গ্রেড উন্নয়ন সংক্রান্ত বিদ্যমান নিয়ম পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছি। কারণ বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যেসব শিক্ষার্থী ৩.০০ বা তার নিচে GPA পেয়ে উত্তীর্ণ হয়, তারা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চ ৮ ক্রেডিট পর্যন্ত কোর্স বা ভাইভা উন্নয়নের জন্য আবেদন করতে পারে (যেসব কোর্স বা ভাইভাতে ৩.০০ গ্রেডের নিচে গ্রেড পাওয়া গেছে)। দুঃখজনকভাবে দেখা যায়, অনেক ডিপার্টমেন্টে এই নিয়মের যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। শিক্ষার্থীদের মতে, এই সীমাবদ্ধতা অনেকের জন্য ফলাফল উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবিত সংশোধনী হচ্ছে যেসব শিক্ষার্থী ৩.২৫ বা তার নিচে GPA পেয়ে উত্তীর্ণ হয়, তারা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চ ৮ ক্রেডিট পর্যন্ত কোর্স বা ভাইভা উন্নয়নের জন্য আবেদন করতে পারে (যেসব কোর্স বা ভাইভাতে ৩.০০ গ্রেডের নিচে গ্রেড পাওয়া গেছে)।
অপর দাবিটি হচ্ছে, অনার্সের চতুর্থ (ফাইনাল) বর্ষে যেসব শিক্ষার্থীর মানোন্নয়ন পরীক্ষার প্রয়োজন হয়, তাদের পরবর্তী ব্যাচের সাথে পরীক্ষা দিতে হয়। ফলে তারা এক বছর পিছিয়ে পড়ে এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ হারায়। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও ক্যারিয়ার বিবেচনায় চতুর্থ বর্ষের ফলাফল প্রকাশের পূর্বেই মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদানের বিষয়ে আপনার সদয় সিদ্ধান্ত কামনা করছি।
এ বিষয়ে জাকসুর সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “মানোন্নয়ন নীতিমালা বর্তমানে অনেকের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও মানসিক চাপ বিবেচনায় এ নীতিকে আরও মানবিক ও বাস্তবসম্মত করা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের ন্যায্য সুযোগ ও একাডেমিক অগ্রগতি নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। মানোন্নয়ন পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি সহজ হলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের ফলাফল উন্নত করার ন্যায্য সুযোগ পাবে।”
এছাড়া জাকসু সব সময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্মারকলিপি প্রদানকালে জাকসুর প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আবু উবায়দা, পরিবহন সম্পাদক তানভীর রহমান ও কার্যকরী সদস্য আবু তালহা।















