সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সংগঠনের অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। পদবঞ্চিত নেতারা কমিটিতে বিতর্কিত, নিষ্ক্রিয় এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের স্থান দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে এমন ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে যারা ছাত্রদলের কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না।
সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক মো. মোখলেসুর রহমান এবং সদস্যসচিব ফয়সাল রেজার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মোখলেসুর রহমানের নিয়মিত ছাত্র না হওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি ফয়সাল রেজার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলার অভিযোগ তাকে আরও বেশি বিতর্কিত করেছে। এছাড়াও, কমিটি গঠনে প্রভাবশালী নেতাদের মাধ্যমে অর্থ ও উপঢৌকন লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা একটিও আন্দোলন করেননি, তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। আমরা যারা সংগঠনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি, তাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। এই কমিটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’
সাবেক সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘এই কমিটি শিক্ষার্থীদের কোনো মূল্যায়ন করে না। এর মাধ্যমে ছাত্রদলের সম্মান ক্ষুন্ন হবে।’
বাঙলা কলেজের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার মো. মিলন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের জন্য কাজ করেছি, আন্দোলন করেছি, হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। অথচ আমাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে। এটি পুরোপুরি অন্যায্য এবং সংগঠনের মূলনীতির পরিপন্থী।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অস্পষ্ট এবং আমাদের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র চলছে। কমিটি গঠনে যারা দায়ী, তারা আন্দোলন বা সংগঠনের সঙ্গে কখনও জড়িত ছিলেন না। বর্তমান কমিটি সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং ঐক্য ভঙ্গ করবে।
পদবঞ্চিত নেতারা অবিলম্বে এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, বর্তমান কমিটি গঠনে নীতিহীনতা ও বৈষম্যের স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠেছে, যা সংগঠনের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এখন পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বাঙলা কলেজ ইউনিটের এই বিতর্কিত কমিটি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, সংগঠনের অভ্যন্তরের আলোচনা অনুযায়ী, কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল ও ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতার প্রভাব ছিল বলে শোনা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্রদল যদি তার ঐতিহ্য ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে চায়, তাহলে এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা উচিত। অন্যথায়, সংগঠনের মধ্যে বিভক্তি ও অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।
