ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
Logo হাঁসের মৃত্যুহার কমাতে বাকৃবির ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন সিড, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর Logo প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক পদ বাতিলের প্রতিবাদে জাবিতে ‘গানের মিছিল’ Logo হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উদ্যোগে মেয়েদের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা Logo সাংবাদিক মেরে বহিস্কৃত তিন ইবি শিক্ষার্থী, থাকতে পারবেন না হলেও Logo মানোন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার ও বিশেষ পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে জাকসুর স্মারকলিপি Logo উৎসবমুখর পরিবেশে ইবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে PSOB-এর নির্বাচন সম্পন্ন Logo জাবিতে পুনরায় অটোরিক্সা চালুর অনুমোদনে কমিটি গঠন Logo জাবি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জামায়াত নেতার মানহানির মামলা, ছাত্রদলের নিন্দা Logo পরিবেশ সচেতনতায় ইবি গ্রীন ভয়েসের পোস্টার প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা Logo কোনো ডেটা খরচ ছাড়াই আয়কর ই-রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিচ্ছে রবি

স্নাতকোত্তর শেষে ব্যতিক্রমী বিদায় আয়োজন ইবির আল-কুরআন শিক্ষার্থীদের

  • সাকীফ বিন আলম
  • প্রকাশিত ১২:২০:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৩ বার পঠিত

গতানুগতিক র‌্যাগ ডে সংস্কৃতির বাহিরে গিয়ে ব্যতিক্রমী বিদায় আয়োজন করে দৃষ্টি কেড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কোরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এমটিআইএস (মাস্টার্স অফ থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ) ২০২২-২৩ এর শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় অনুষদ ভবনের ২য় ফটক থেকে বিদায় র‌্যালি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অনুষদ ভবনের সামনে এসে ফটো সেশনের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা একই রংয়ের আবায়া এবং টুপি পড়েন। তাদের এই ব্যতিক্রমী পোশাক নজর কাড়ছিলো অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন বিভাগের ৩৩ তম ব্যাচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ খেতাব নিয়ে বিদায় নিচ্ছেন। তাদের এবারের ব্যাচ থেকে মোট ৭৯ জন শিক্ষাথী মাস্টার্স পরিক্ষা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ আঙ্গনে অবদান রেখেছেন তাদের এ ব্যাচ। এছাড়াও দেশের বাহিরে কৃতিত্বের সাথে অবদান ও রাখছেন।

র‍্যালি শেষে শিক্ষার্থীরা আবেগঘণ অনুভূতি প্রকাশের অভিপ্রায়ে বিভাগ মিলনায়তনে মিলিত হন। এই সেশনে বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন মিঝির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ- উপাচার্য এবং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী। এছাড়াও বিভাগের সকল শিক্ষক গণ উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বিদায়ী নসিহত করেন।

অনুভূতি প্রকাশে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ আমাদের বিদায়ের দিনে এখানে কারোর সাথে রক্তের সম্পর্ক নেই, কিন্তু ছয় বছরে আত্মার সম্পর্ক এমন পর্যায়ে উপনিত হয়েছে যে বিদায় নিতে কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে। জীবনের সেরা সময় টা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এটাই মনে হয় জীবনের আনন্দময় দিন, এই দিন গুলো আর জীবনে ফিরে পাবো বলে মনে হয় না। সর্বশেষ সকলের জীবনের সাফল্য কামনা করেন তারা।

বিদায়ী শিক্ষার্থী আদিব মাহবুব বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই আবেগআপ্লুত পাশাপাশি আমার হৃদয়টাও অনেক ব্যথিত হচ্ছে। কারণ বন্ধুদের সাথে সহজে সাক্ষাতের পথটা আজকে থেকে কঠিন হয়ে যাবে। তবে আনন্দের দিক হচ্ছে আমরা আল কুরআন এর উপর এতবড় একটা ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমরা দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমাদেরকে ডিগ্রি দিয়ে কল্যাণের পথে পরিচালিত হওয়ার সৌভাগ্য নসিব করেন।”

আরেক বিদায়ী শিক্ষার্থী মোঃ সাইফুল্লাহ বলেন, “আমরা আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি করলাম। বিদায়লগ্নে সম্মানিত শিক্ষক বৃন্দের আবেগ মাখা আশির্বাদ ও প্রিয় সহপাঠীবৃন্দের অশ্রুসিক্ত নয়নে আপ্লুত ছিলাম সকলে। আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন চির অটুট থাকুক এবং আগামীর পথ চলা সুন্দর ও সাফল্যমন্ডিত হোক সেই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করছি। আর আজকের আয়োজনের ব্যাপারে বলতে চাই, আমরা একটি ব্যতিক্রম আয়োজন করার চেষ্টা করেছি। ক্যাম্পাসে চলমান অশালীন অপসংস্কৃতির বিপরীতে একদল আল-কুরআনের ছাত্র হিসেবে আমরা শালীনভাবে এই বিদায় আয়োজন করেছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ- উপাচার্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “কুরআনের ছাত্র হিসেবে আপনাদের যেই কাজ করতে হবে, সেটা হল আপনাদেরকে কোরআনের ভুল ব্যাখ্যা করা যাবে না, অপেক্ষা করা যাবে না। এই কুরআন কোন ধর্মীয় গ্রন্থ নয় বরং এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত, আপনাদের সমগ্র মানবজাতির কাছে এই কোরআনের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য কাজ করে যেতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন “তোমরা একটা কথা মনে রাখবা, যদি তোমরা আল কোরআনকে ধারণ করতে পারো, তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না। যে যেখানে যে দায়িত্বই পালন করো না কেন মনে রাখবে আমি একজন আল-কুরআনের ছাত্র।”

উল্লেখ্য, আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ। যারা এখন ৩৮ তম ব্যাচ চলমান।

জনপ্রিয়

হাঁসের মৃত্যুহার কমাতে বাকৃবির ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন সিড, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর

স্নাতকোত্তর শেষে ব্যতিক্রমী বিদায় আয়োজন ইবির আল-কুরআন শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত ১২:২০:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গতানুগতিক র‌্যাগ ডে সংস্কৃতির বাহিরে গিয়ে ব্যতিক্রমী বিদায় আয়োজন করে দৃষ্টি কেড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কোরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এমটিআইএস (মাস্টার্স অফ থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ) ২০২২-২৩ এর শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় অনুষদ ভবনের ২য় ফটক থেকে বিদায় র‌্যালি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অনুষদ ভবনের সামনে এসে ফটো সেশনের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা একই রংয়ের আবায়া এবং টুপি পড়েন। তাদের এই ব্যতিক্রমী পোশাক নজর কাড়ছিলো অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন বিভাগের ৩৩ তম ব্যাচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ খেতাব নিয়ে বিদায় নিচ্ছেন। তাদের এবারের ব্যাচ থেকে মোট ৭৯ জন শিক্ষাথী মাস্টার্স পরিক্ষা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ আঙ্গনে অবদান রেখেছেন তাদের এ ব্যাচ। এছাড়াও দেশের বাহিরে কৃতিত্বের সাথে অবদান ও রাখছেন।

র‍্যালি শেষে শিক্ষার্থীরা আবেগঘণ অনুভূতি প্রকাশের অভিপ্রায়ে বিভাগ মিলনায়তনে মিলিত হন। এই সেশনে বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন মিঝির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ- উপাচার্য এবং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী। এছাড়াও বিভাগের সকল শিক্ষক গণ উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বিদায়ী নসিহত করেন।

অনুভূতি প্রকাশে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ আমাদের বিদায়ের দিনে এখানে কারোর সাথে রক্তের সম্পর্ক নেই, কিন্তু ছয় বছরে আত্মার সম্পর্ক এমন পর্যায়ে উপনিত হয়েছে যে বিদায় নিতে কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে। জীবনের সেরা সময় টা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এটাই মনে হয় জীবনের আনন্দময় দিন, এই দিন গুলো আর জীবনে ফিরে পাবো বলে মনে হয় না। সর্বশেষ সকলের জীবনের সাফল্য কামনা করেন তারা।

বিদায়ী শিক্ষার্থী আদিব মাহবুব বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই আবেগআপ্লুত পাশাপাশি আমার হৃদয়টাও অনেক ব্যথিত হচ্ছে। কারণ বন্ধুদের সাথে সহজে সাক্ষাতের পথটা আজকে থেকে কঠিন হয়ে যাবে। তবে আনন্দের দিক হচ্ছে আমরা আল কুরআন এর উপর এতবড় একটা ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমরা দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমাদেরকে ডিগ্রি দিয়ে কল্যাণের পথে পরিচালিত হওয়ার সৌভাগ্য নসিব করেন।”

আরেক বিদায়ী শিক্ষার্থী মোঃ সাইফুল্লাহ বলেন, “আমরা আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি করলাম। বিদায়লগ্নে সম্মানিত শিক্ষক বৃন্দের আবেগ মাখা আশির্বাদ ও প্রিয় সহপাঠীবৃন্দের অশ্রুসিক্ত নয়নে আপ্লুত ছিলাম সকলে। আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন চির অটুট থাকুক এবং আগামীর পথ চলা সুন্দর ও সাফল্যমন্ডিত হোক সেই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করছি। আর আজকের আয়োজনের ব্যাপারে বলতে চাই, আমরা একটি ব্যতিক্রম আয়োজন করার চেষ্টা করেছি। ক্যাম্পাসে চলমান অশালীন অপসংস্কৃতির বিপরীতে একদল আল-কুরআনের ছাত্র হিসেবে আমরা শালীনভাবে এই বিদায় আয়োজন করেছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ- উপাচার্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “কুরআনের ছাত্র হিসেবে আপনাদের যেই কাজ করতে হবে, সেটা হল আপনাদেরকে কোরআনের ভুল ব্যাখ্যা করা যাবে না, অপেক্ষা করা যাবে না। এই কুরআন কোন ধর্মীয় গ্রন্থ নয় বরং এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত, আপনাদের সমগ্র মানবজাতির কাছে এই কোরআনের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য কাজ করে যেতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন “তোমরা একটা কথা মনে রাখবা, যদি তোমরা আল কোরআনকে ধারণ করতে পারো, তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না। যে যেখানে যে দায়িত্বই পালন করো না কেন মনে রাখবে আমি একজন আল-কুরআনের ছাত্র।”

উল্লেখ্য, আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ। যারা এখন ৩৮ তম ব্যাচ চলমান।