জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন ২৫টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। পাশাপাশি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদদের নিয়ে জুলাই সনদ সই করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন। তবে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও চারটি বাম দলসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেননি।
অংশগ্রহণকারী নেতারা হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদের ও মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল মাজেদ আতহারী ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, গণ-অধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম ও মিডিয়া সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ও মহাসচিব মোমিনুল আমিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ভূইয়া ও গাজীপুর জেলা ছাত্র ফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হাসান শেখ, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক আমিনুল হক টিপু বিশ্বাস ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মঞ্জুরুল আরেফিন লিটু বিশ্বাস, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম (বাবলু) ও মহাসচিব মোহাম্মদ আবু ইউসুফ (সেলিম), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, আমজনতার দলের সভাপতি কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদের নেতারা যাননি। এর মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) জানিয়েছিলেন, আইনি ভিত্তি দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন না।
একই দিন বিকালে মুক্তি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে চার মূলনীতি প্রশ্নে কমিশনের বিরুদ্ধে তাদের কথা না রাখার অভিযোগ তুলে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাম দলগুলো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা সনদে স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করেনি। আমাদের দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি।’
একই কথা জানান বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কাফী রতন। তিনি বলেন, ‘এনসিপিকে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সরকার অনেক দেনদরবার করেছে। কিন্তু আমাদের সংবাদ সম্মেলনের পর এই পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করার প্রয়োজন মনে করেনি। অথচ আমরা শুরু থেকেই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি। আমরা মনে করি এতে সনদ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।’
















