বর্তমানে আমরা এমন এক সময়ে বসবাস করছি যেখানে একটানা অনেক্ষণ আমরা মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই দিন পার করে দেই। কাজের এই একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে পাশাপাশি চোখের প্রশান্তির জন্য অফিস বা বাসার চারপাশে ইনডোর প্ল্যান্ট এর ব্যবহার ইদানিং বেশ লক্ষনীয়।
অফিস, বাসার কর্ণার বা বেলকনি সাজানোর জন্য পিস লিলি, স্নেক প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট, ফিলোডেনড্রন, তুলসী, চাইনিজ এভারগ্রিন, এবং স্পাইডার প্ল্যান্ট খুব উপযোগী গাছ। এই গাছগুলো সাধারনত কম রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় এবং কর্মক্ষেত্রে সবুজের ছোঁয়া এনে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে।
কচু পাতার মতো দেখতে ফিলোডেন্ড্রন ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এগুলো সাধারনত অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার গ্রীষ্মমন্ডলীয় বনাঞ্চলে জন্মে। লিয়ানাস, আধা-গুল্ম, স্থলজ গাছ, আধা-এপিফাইটস, এপিফাইটস – এরকম প্রায় চার শতাধিক প্রজাতি ফিলোডেনড্রন হিসেবে পরিচিত।
ফিলোডেনড্রন সাধারনত লিকলিকে লতা, লম্বায় ৪ ফুট বা তার বেশিও হয়। অন্ধকার বা কম আলো সহ্য করার ক্ষমতা এর আছে। শুধু মাটিতেই নয়, বোতলের পানিতেও এটা দিনের পর দিন টিকে থাকতে পারে। কয়েকদিন পরপর বোতলের পানি বদলে দিলেই এগুলো বেশ সুন্দর ও ঝরঝরে থাকে। মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত লম্বা লতা ও মরা পাতা ছেঁটে ফেলতে হয়।
কেন বেছে নিবো ফিলোডেনড্রন?
প্রতিনিয়ত আমরা যে শ্বাস গ্রহণ করি এতে মিশে থাকে বিভিন্ন ধরণের ধূলোময়লা এবং বিষাক্ত পদার্থ। ফিলোডেনড্রন বাতাসের ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে শোষণ করে বাতাসকে দূষনমুক্ত করে।পাতার রাজা হিসাবে পরিচিত, ফিলোডেনড্রনের বড়, টেক্সচারযুক্ত পাতাগুলি শুধু সৌন্দর্যই বর্ধন করে না বরং টক্সিন শোষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর পাতাগুলি ক্ষুদ্র ছিদ্র দ্বারা আবৃত থাকে যা কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন বের করে দেয়। সব উদ্ভিদই সালোকসংশ্লেষণের সময় অক্সিজেন উৎপন্ন করে, কিন্তু এই গাছগুলো এটি করতে বিশেষভাবে দক্ষ।
এর বড়, মোমযুক্ত পাতাগুলিও ধূলিকণার ফাঁদ হিসেবে কাজ করে। ধুলোবালি পড়লে খুব সহজেই মুছে ফেলা যায়। বেশিরভাগ অফিসে এখন সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার থাকে, এতে বাইরের আলো-বাতাস ভেতরে চলাচল করে না বললেই চলে। আমদের চারপাশে সবুজের ছোঁয়া থাকলে একদিকে যেমন শরীর, মন দুটোই প্রফুল্ল ও চাঙ্গা থাকে অন্যদিকে ভেতরের বাতাসটাও বিশুদ্ধ থাকে।
















