হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো একসাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা (কালীপূজা) ও দীপাবলি।
বাংলা সংস্কৃতিতে প্রচলিত প্রবাদ—“বারো মাসে তেরো পার্বণ”—এর মর্ম যেন ফুটে উঠেছিল হাবিপ্রবির ক্যাম্পাসজুড়ে। দুর্গোৎসবের আমেজ কাটতে না কাটতেই দীপাবলির রঙিন আলোয় ঝলমল করে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।
২০২৫ সালের কালীপূজা পালিত হয় সোমবার (২০ অক্টোবর) কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে। তিথিটি শুরু হয় বিকেল ৩টা ৪৪ মিনিটে এবং শেষ হবে ২১ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৪ মিনিটে।
পূজা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দির সাজানো হয় ফুল, কলাগাছ, কারুকার্য ও দীপের আলোয়। প্রবেশমুখে প্রদীপের প্রজ্বলিত শিখা আর দেবীমূর্তির সামনে ধূপ, ফুল, ফল ও শাখা-সিঁদুরে ছিল ধর্মীয় ভক্তি ও সৌন্দর্যের সমন্বয়।
অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী বিকেল ৫টায় শুরু হয় শ্যামা সংগীত পরিবেশনা, সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে প্রদীপ প্রজ্বলন, এবং রাত ৭টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় নেপালি শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত “দেউচি ভেওলো” — যা নেপালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলি উৎসবের অংশ হিসেবে পরিবেশিত হয়। নির্দিষ্ট তিথি অনুযায়ী রাত ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হাবিপ্রবিতে নেপালি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নিজস্ব সংস্কৃতির “দেউচি ভেওলো” পরিবেশনা উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করে।
সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদ (SVS)-এর সভাপতি রিপন চন্দ্র সেন (এগ্রিকালচার-২১) বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে হাবিপ্রবি কেন্দ্রীয় মন্দিরে অনুষ্ঠিত হলো দীপাবলি ও শ্যামাপূজা। অন্ধকার থেকে আলোর পথে, মিথ্যা থেকে সত্যের পথে চলার বার্তা নিয়ে এ উৎসব সবার মধ্যে শান্তি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন তৈরি করুক—এই প্রত্যাশা করি।
SVS-এর সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায় (ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং-২২) বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে দীপাবলি ও শ্যামাপূজা উদযাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত। এটি হাবিপ্রবি পরিবারের এক অনন্য মিলনমেলা।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে SVS সভাপতি রিপন চন্দ্র সেন ও সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। দিনব্যাপী এই উৎসবে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, হাবিপ্রবি।
দীপাবলির আলোয় আলোকিত এই দিনটি হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দিয়েছে ভ্রাতৃত্ব, আনন্দ ও সম্প্রীতির বার্তা।





















