ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
Logo তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে অংশীজন অন্তর্ভুক্তিতে সরকারের অনাগ্রহ নিয়ে উদ্বিগ্ন তামাক শিল্প Logo ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কবি নজরুল কলেজের উবায়দুল্লাহ, তাজিম Logo শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ক্র্যাবে’র শ্রদ্ধা নিবেদন Logo শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী Logo যথাযথ মর্যাদায় যবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন Logo জাবি রোভার স্কাউটসের সভাপতি খায়রুল, সম্পাদক তাওফিক Logo শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাবিতে ছাত্রশক্তির আয়োজনে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন Logo জাবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত Logo জাবির নবনির্মিত ছয় আবাসিক হলে গ্যাস সংযোগ উদ্বোধন Logo শিক্ষার্থীকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতার হত্যার হুমকি

বিচারকপুত্র হত্যার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি ইবির আইন শিক্ষার্থীদের

  • সাকীফ বিন আলম
  • প্রকাশিত ০৬:২১:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪৪ বার পঠিত

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারকের ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারকদের নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা পৌনে বারোটার দিকে মীর মশাররফ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। এসময় আইন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত আইন, আল ফিকহ অ্যান্ড ল এবং ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি সময়ে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেছে। একটি রাষ্ট্রের সবথেকে ভাইটাল অর্গান হচ্ছে জুডিশিয়ারি। একটি রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের একটা এক্সপেক্টেশন থাকে, রাষ্ট্র তার কথা না শুনুক, প্রশাসন তার কথা না শুনুক, পুলিশ তার কথা না শুনুক, আদালত শুনবে এবং তাকে ন্যায়বিচার প্রদান করবে। সেই ন্যায়বিচার প্রদানের যে আশ্রয়স্থল আদালত, তার নিরাপত্তা যেহেতু রাষ্ট্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সাধারণ মানুষ সেখানে শঙ্কিত। রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষসহ সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র এখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, যেখানে রাষ্ট্র আদালতকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে দিবে? এজন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় (সেক্রেটারিয়েট) গঠন করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করে জুডিশিয়ারিকে আলাদা করে বিচারপতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ন্যায়বিচার যাতে মানুষ পায়, তার সমস্ত ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে নিতে হবে। রাষ্ট্র যদি এর যথাযথ ব্যবস্থা না করে এবং যে হত্যাকারীকে যথোপযুক্ত শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করে, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

আইন বিভাগের পক্ষ থেকে ইমাম হোসেন বলেন, অবিচারের রাষ্ট্র চলছে। আজকে আমরা যেই ঘটনা লক্ষ্য করলাম যে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজকে জজের পরিবারের উপর যে নৃশংস ঘটনা সেটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি সংকটকে আমাদের সামনে হাজির করেছে। যদি বিচারকরা নিঃসংকোচে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করতে পারেন, তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোনভাবেই আমরা আশা করতে পারি না। বিচার বিভাগের সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির পারিবারিক নিরাপত্তা যেমন দরকার, তেমনি দরকার তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। একজন দায়রা জজ আদালতের বিচারককে ভয়ঙ্কর সব অপরাধীদের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করতে হয়। যদি তাদের রাষ্ট্র সিকিউরিটি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমাদের দেশে যত ভয়ঙ্কর অপরাধ সংঘটিত হয়, তার বিচার করতে আমরা ব্যর্থ হব। যদি আমরা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হই, তাহলে অপরাধের যে বিস্তার সেটা আরও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাষ্ট্রকে সভ্য, সুশৃঙ্খল অবস্থায় দেখতে চাই এবং একটি রাষ্ট্রকে আমরা দেখতে চাই, সেহেতু রাষ্ট্রের উচিত সিকিউরিটি বাড়াতে হবে বিচারকদের।

আমরা চাই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ যারা নিশ্চিত করতে চায়, তারা যেন আজ থেকেই বিচারকদের, বিচার সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের নিরাপত্তা প্রদানে যা যা প্রয়োজন সেই সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এছাড়া তাদের দাবি, দ্রুত বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের যথাযথ প্রটেকশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তারক্ষী সহ অন্যান্য নিরাপত্তা সামগ্রী যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে। অন্যথায়, বিচারকবর্গ কলম বিরতির যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, সেটার সাথে আমরা সংহতি ঘোষণা করে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত লিমন মিয়াকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন।

জনপ্রিয়

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে অংশীজন অন্তর্ভুক্তিতে সরকারের অনাগ্রহ নিয়ে উদ্বিগ্ন তামাক শিল্প

বিচারকপুত্র হত্যার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি ইবির আইন শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত ০৬:২১:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারকের ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারকদের নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা পৌনে বারোটার দিকে মীর মশাররফ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। এসময় আইন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত আইন, আল ফিকহ অ্যান্ড ল এবং ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি সময়ে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেছে। একটি রাষ্ট্রের সবথেকে ভাইটাল অর্গান হচ্ছে জুডিশিয়ারি। একটি রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের একটা এক্সপেক্টেশন থাকে, রাষ্ট্র তার কথা না শুনুক, প্রশাসন তার কথা না শুনুক, পুলিশ তার কথা না শুনুক, আদালত শুনবে এবং তাকে ন্যায়বিচার প্রদান করবে। সেই ন্যায়বিচার প্রদানের যে আশ্রয়স্থল আদালত, তার নিরাপত্তা যেহেতু রাষ্ট্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সাধারণ মানুষ সেখানে শঙ্কিত। রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষসহ সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র এখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, যেখানে রাষ্ট্র আদালতকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে দিবে? এজন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় (সেক্রেটারিয়েট) গঠন করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করে জুডিশিয়ারিকে আলাদা করে বিচারপতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ন্যায়বিচার যাতে মানুষ পায়, তার সমস্ত ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে নিতে হবে। রাষ্ট্র যদি এর যথাযথ ব্যবস্থা না করে এবং যে হত্যাকারীকে যথোপযুক্ত শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করে, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

আইন বিভাগের পক্ষ থেকে ইমাম হোসেন বলেন, অবিচারের রাষ্ট্র চলছে। আজকে আমরা যেই ঘটনা লক্ষ্য করলাম যে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজকে জজের পরিবারের উপর যে নৃশংস ঘটনা সেটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি সংকটকে আমাদের সামনে হাজির করেছে। যদি বিচারকরা নিঃসংকোচে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করতে পারেন, তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোনভাবেই আমরা আশা করতে পারি না। বিচার বিভাগের সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির পারিবারিক নিরাপত্তা যেমন দরকার, তেমনি দরকার তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। একজন দায়রা জজ আদালতের বিচারককে ভয়ঙ্কর সব অপরাধীদের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করতে হয়। যদি তাদের রাষ্ট্র সিকিউরিটি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমাদের দেশে যত ভয়ঙ্কর অপরাধ সংঘটিত হয়, তার বিচার করতে আমরা ব্যর্থ হব। যদি আমরা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হই, তাহলে অপরাধের যে বিস্তার সেটা আরও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাষ্ট্রকে সভ্য, সুশৃঙ্খল অবস্থায় দেখতে চাই এবং একটি রাষ্ট্রকে আমরা দেখতে চাই, সেহেতু রাষ্ট্রের উচিত সিকিউরিটি বাড়াতে হবে বিচারকদের।

আমরা চাই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ যারা নিশ্চিত করতে চায়, তারা যেন আজ থেকেই বিচারকদের, বিচার সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের নিরাপত্তা প্রদানে যা যা প্রয়োজন সেই সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এছাড়া তাদের দাবি, দ্রুত বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের যথাযথ প্রটেকশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তারক্ষী সহ অন্যান্য নিরাপত্তা সামগ্রী যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে। অন্যথায়, বিচারকবর্গ কলম বিরতির যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, সেটার সাথে আমরা সংহতি ঘোষণা করে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত লিমন মিয়াকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন।