ঢাকা ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
Logo পানিতে ৬০ দিন টিকে থাকার সক্ষমতা ও উজ্জ্বলতম ডিসপ্লে নিয়ে রিয়েলমি সি৮৫ প্রো উন্মোচন Logo এয়ারটেল গেমিং অ্যারেনা’-তে চ্যাম্পিয়ন এ ওয়ান আরজি ইস্পোর্টস Logo স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘হুমায়ুন আহমেদ সপ্তাহ’ Logo NEIR বাস্তবায়নের মাধ্যমে হ্যান্ডসেট শিল্পে শুরু হচ্ছে নতুন অধ্যায় Logo হাঁসের মৃত্যুহার কমাতে বাকৃবির ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন সিড, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর Logo প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক পদ বাতিলের প্রতিবাদে জাবিতে ‘গানের মিছিল’ Logo হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উদ্যোগে মেয়েদের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা Logo সাংবাদিক মেরে বহিস্কৃত তিন ইবি শিক্ষার্থী, থাকতে পারবেন না হলেও Logo মানোন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার ও বিশেষ পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে জাকসুর স্মারকলিপি Logo উৎসবমুখর পরিবেশে ইবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে PSOB-এর নির্বাচন সম্পন্ন

বঙ্গভবনের সামনে উত্তেজনার ৬ ঘণ্টা

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দিনভর বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। তবে রাত গড়াতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা অব্যাহত আছে।

বিকেল তিনটায় বঙ্গভবন ঘেরাও করা হবে- এমন ঘোষণা রোববার রাতেই দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। বিকেল হতে সেই ঘোষণার ছাপ পড়তে শুরু করে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে। বিকেল যত গড়াতে থাকে তত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলে দফায় দফায়। এতে গুলিস্তান থেকে টিকাটুলি যাওয়ার সড়কটি শেষ বিকেলে বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত মানুষ। বাধ্য হয়ে লোকজন রাজউক ভবনের পাশ দিয়ে পূর্ব দিকের সড়কটি ব্যবহার করতে শুরু করে। এতে যানজটের দেখা দেয় গুলিস্তান এলাকায়।

এছাড়াও মূল আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে চলে যাওয়ার পরই উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ব্যারিকেট ভেঙে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ধাওয়া দেয়। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা গেছে।

Bongo2

বিকেলে প্রথমে সেখানে মানববন্ধন করে চার দফা দাবি জানায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি (স্মারক) নামের একটি সংগঠন। পরে সাড়ে চারটার দিকে আসে আহত ও নিহতদের নতুন সংগঠন ‘রক্তিম জুলাই ২৪’ এর কর্মীরা। তারা এসেই বঙ্গভবনের প্রবেশ মুখে পুলিশ ও সেনার ব্যারিকেডের সামনে বসে পড়ে। এসময় স্লোগান দিতে শুরু করে। পরে সেখানে এসে যোগ দেয় ইনকিলাব মঞ্চ, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মঞ্চ ও ৩৬ জুলাই পরিষদের শতাধিক কর্মীরা৷ একে একে যোগ দেয় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরাও। পরে এসে যোগ দেয় ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ নামে আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে রাজউক ভবনের সামনে তিন রাস্তার মোড়েই মাগরিবের নামাজ আদায় করেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা৷ এরপর তারা আবারো স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাদের এই আন্দোলনে বিভিন্ন বয়সী মানুষেরা যোগ দিতে থাকেন।

সন্ধ্যার পর রক্তিম জুলাইয়ের কর্মীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সেখানে এসেই প্রথমে রাষ্ট্রপতির বরাবরে তার পদত্যাগসহ নানা দাবি তুলে ধরে বঙ্গভবনের ভেতরে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি পাঠায়। কিন্তু তিন চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো জবাব পায়নি। এরই মধ্যে সন্ধ্যার পর সেই সংগঠনটি সেখান থেকে সরে যায়। তাদের ভাষ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের বড় ভাইয়েরা তাদের চলে যেতে বলেছে।

তারা চলে যাওয়ার পরই সেখানে আগে থেকে অবস্থানকারী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা গণভবনের সামনের প্রবেশ মুখে বসে পড়ে। এসময় তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরে মারমুখী হয়ে বঙ্গভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টায় তারা ব্যারিকেট ভেঙে ফেলে এগোতে থাকলে সেনাবাহিনী বাধা দেয়। পরে ৮টা ২২ মিনিটে আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের উদ্দেশে সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। এতে দুই আন্দোলনকারী আহত হন। পাশাপাশি কয়েকজন ছাত্রের হামলায় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন বলে জানা গেছে।

Police

এর কয়েক মিনিট পর আবারও আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। সেখানে পূর্ব দিকের দেয়াল ধরে গণভবনের ব্যারিকেট দিয়ে এক দল রিজার্ভ পুলিশ সদস্যরা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাদের হামলার চেষ্টা চালায়। তবে তারা অল্পের জন্য রক্ষা পান।

এরপর রাত পৌনে আটটায় একদল আন্দোলনকারী রাজউক ভবনের পূর্ব পাশের সড়কে থাকা পুলিশের হলুদ জলকামানকে উদ্দেশ্য করে আকস্মিক হামলা করে বসে। এতে গাড়িটিতে থাকা চালক সেটি দ্রুত টেনে দৈনিক বাংলার দিকে চলে যান।

পরে আন্দোলনকারীরা আবারও ব্যারিকটের সামনে এসে দাঁড়ান এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। সেখানে কয়েকজন তরুণী ও যুবককে মারমুখী হতে দেখা যায়। মুহূর্তেই সেখানে শত শত লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। এরপর তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।

জনপ্রিয়

পানিতে ৬০ দিন টিকে থাকার সক্ষমতা ও উজ্জ্বলতম ডিসপ্লে নিয়ে রিয়েলমি সি৮৫ প্রো উন্মোচন

বঙ্গভবনের সামনে উত্তেজনার ৬ ঘণ্টা

প্রকাশিত ১১:১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দিনভর বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। তবে রাত গড়াতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা অব্যাহত আছে।

বিকেল তিনটায় বঙ্গভবন ঘেরাও করা হবে- এমন ঘোষণা রোববার রাতেই দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। বিকেল হতে সেই ঘোষণার ছাপ পড়তে শুরু করে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে। বিকেল যত গড়াতে থাকে তত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলে দফায় দফায়। এতে গুলিস্তান থেকে টিকাটুলি যাওয়ার সড়কটি শেষ বিকেলে বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত মানুষ। বাধ্য হয়ে লোকজন রাজউক ভবনের পাশ দিয়ে পূর্ব দিকের সড়কটি ব্যবহার করতে শুরু করে। এতে যানজটের দেখা দেয় গুলিস্তান এলাকায়।

এছাড়াও মূল আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে চলে যাওয়ার পরই উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ব্যারিকেট ভেঙে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ধাওয়া দেয়। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা গেছে।

Bongo2

বিকেলে প্রথমে সেখানে মানববন্ধন করে চার দফা দাবি জানায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি (স্মারক) নামের একটি সংগঠন। পরে সাড়ে চারটার দিকে আসে আহত ও নিহতদের নতুন সংগঠন ‘রক্তিম জুলাই ২৪’ এর কর্মীরা। তারা এসেই বঙ্গভবনের প্রবেশ মুখে পুলিশ ও সেনার ব্যারিকেডের সামনে বসে পড়ে। এসময় স্লোগান দিতে শুরু করে। পরে সেখানে এসে যোগ দেয় ইনকিলাব মঞ্চ, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মঞ্চ ও ৩৬ জুলাই পরিষদের শতাধিক কর্মীরা৷ একে একে যোগ দেয় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরাও। পরে এসে যোগ দেয় ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ নামে আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে রাজউক ভবনের সামনে তিন রাস্তার মোড়েই মাগরিবের নামাজ আদায় করেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা৷ এরপর তারা আবারো স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাদের এই আন্দোলনে বিভিন্ন বয়সী মানুষেরা যোগ দিতে থাকেন।

সন্ধ্যার পর রক্তিম জুলাইয়ের কর্মীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সেখানে এসেই প্রথমে রাষ্ট্রপতির বরাবরে তার পদত্যাগসহ নানা দাবি তুলে ধরে বঙ্গভবনের ভেতরে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি পাঠায়। কিন্তু তিন চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো জবাব পায়নি। এরই মধ্যে সন্ধ্যার পর সেই সংগঠনটি সেখান থেকে সরে যায়। তাদের ভাষ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের বড় ভাইয়েরা তাদের চলে যেতে বলেছে।

তারা চলে যাওয়ার পরই সেখানে আগে থেকে অবস্থানকারী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা গণভবনের সামনের প্রবেশ মুখে বসে পড়ে। এসময় তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরে মারমুখী হয়ে বঙ্গভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টায় তারা ব্যারিকেট ভেঙে ফেলে এগোতে থাকলে সেনাবাহিনী বাধা দেয়। পরে ৮টা ২২ মিনিটে আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের উদ্দেশে সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। এতে দুই আন্দোলনকারী আহত হন। পাশাপাশি কয়েকজন ছাত্রের হামলায় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন বলে জানা গেছে।

Police

এর কয়েক মিনিট পর আবারও আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। সেখানে পূর্ব দিকের দেয়াল ধরে গণভবনের ব্যারিকেট দিয়ে এক দল রিজার্ভ পুলিশ সদস্যরা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাদের হামলার চেষ্টা চালায়। তবে তারা অল্পের জন্য রক্ষা পান।

এরপর রাত পৌনে আটটায় একদল আন্দোলনকারী রাজউক ভবনের পূর্ব পাশের সড়কে থাকা পুলিশের হলুদ জলকামানকে উদ্দেশ্য করে আকস্মিক হামলা করে বসে। এতে গাড়িটিতে থাকা চালক সেটি দ্রুত টেনে দৈনিক বাংলার দিকে চলে যান।

পরে আন্দোলনকারীরা আবারও ব্যারিকটের সামনে এসে দাঁড়ান এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। সেখানে কয়েকজন তরুণী ও যুবককে মারমুখী হতে দেখা যায়। মুহূর্তেই সেখানে শত শত লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। এরপর তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।