বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত মানুষ হত্যা করেছে। তার শাসনামলে বাংলাদেশের জনগণের জীবন ছিল দুঃসহ কালরাত। মানুষের মুখে ছিল তালা, হাতে ছিল হ্যান্ডকাফ, পায়ে ছিল বেড়ি।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ভিন্নমত, ভিন্ন আদর্শে সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেশ আমাদের সবার। আগামী দিনের বাংলাদেশ গঠনে পথে পথে বিভিন্ন অন্তরায় দেখতে পাচ্ছি। ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ, তাদের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক চাই। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ভূমিকা ছিল অত্যন্ত উসকানিমূলক, অসহিষ্ণু এবং অগ্রহণযোগ্য। মিথ্যা তথ্যের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশকে কলুষিত করার জন্য এই সরকার এবং জনগণকে ব্যর্থ করার জন্য তারা সারা দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন এবং অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমরা এগুলোর নিন্দা জানিয়েছি।তিনি বলেন, টানা ১৭ বছর ৬ মাসে জাতি বন্দিত্বের নিগড়ে বন্দি ছিল। এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ ছিল মজলুম এবং রাস্তায় যে ভাইটি ভিক্ষা করতেন তিনিও মজলুম। কারণ ওই সব ভিক্ষুককে চাঁদা দিতে হতো গুণ্ডাদের কাছে। চাঁদা না দিলে তারা ভিক্ষা করতে পারতেন না।
জামায়াত আমির বলেন, এই সাড়ে ১৭টি বছর বাংলাদেশের জনগণের জীবনে ছিল দুঃসহ কালরাত। মূলত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে শ’খানেক মানুষকে তারা হত্যা করেছিল। ফ্যাসিবাদের সূত্রপাত তখনই হয়েছিল। স্বৈরাচারের পদধ্বনি তখন থেকেই এসেছিল।
তিনি বলেন, তারপর আপনারা দেখেছেন ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে তারা রাষ্ট্রের গর্বিত প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীর গায়ে আঘাত দিয়েছিল। পিলখানার সদর দপ্তরে ৫৪ জন চৌকস দেশপ্রেমিক সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছে। পরিবারের মহিলা সদস্যদের নির্যাতন, লাঞ্ছিত করেছে। তারপর তাদের হত্যা করে ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি। অথচ সে সময়ে সেনাবাহিনীর কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, সেনাবাহিনীদের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে আরেকটি গর্বের বাহিনী সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিডিআরকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের ১৫ হাজার সদস্যের চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে। কুচক্রীদের চক্রান্তে এসব মানুষদের। জীবন বলি দিতে হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ আবদুর রব, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এড. জসিম উদ্দিন সরকার প্রমুখ
