ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
Logo হাঁসের মৃত্যুহার কমাতে বাকৃবির ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন সিড, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর Logo প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক পদ বাতিলের প্রতিবাদে জাবিতে ‘গানের মিছিল’ Logo হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উদ্যোগে মেয়েদের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা Logo সাংবাদিক মেরে বহিস্কৃত তিন ইবি শিক্ষার্থী, থাকতে পারবেন না হলেও Logo মানোন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার ও বিশেষ পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে জাকসুর স্মারকলিপি Logo উৎসবমুখর পরিবেশে ইবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে PSOB-এর নির্বাচন সম্পন্ন Logo জাবিতে পুনরায় অটোরিক্সা চালুর অনুমোদনে কমিটি গঠন Logo জাবি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জামায়াত নেতার মানহানির মামলা, ছাত্রদলের নিন্দা Logo পরিবেশ সচেতনতায় ইবি গ্রীন ভয়েসের পোস্টার প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা Logo কোনো ডেটা খরচ ছাড়াই আয়কর ই-রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিচ্ছে রবি

পৌষ সংক্রান্তি: বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য

বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি। বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন এই উৎসব পালন করা হয়। বাংলার প্রাচীন উৎসবগুলোর মধ্যে পৌষ সংক্রান্তি একটি। একে পৌষ পার্বণ বা মকর সংক্রান্তিও বলা হয়।

এক সময় বেশ আয়োজন করে পৌষ সংক্রান্তি উদযাপন করা হতো। বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় এ উপলক্ষে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালনের রীতি প্রচলিত ছিল। কালের বিবর্তনে এখন এই উৎসব অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে। তবুও ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষরা এখনও ঘটা করে উদযাপন করতে পৌষ সংক্রান্তি।

 

poush-shangkranti

পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে বাড়িতে বাড়িতে পিঠা-পুলির আয়োজন করা হয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত পিঠা উৎসবের মধ্যে পৌষ সংক্রান্তি বিশেষ স্থান অধিকার করে নিয়েছে।

মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পিতৃপুরুষ ও বাস্তুদেবতার জন্য তিল কিংবা খেজুর গুড় দিয়ে তিলুয়া তৈরি করে। নতুন চালে তৈরি করা পিঠার অর্ঘ্য দান করে। এ কারণে পৌষ সংক্রান্তির আরেক নাম তিলুয়া সংক্রান্তি বা পিঠা সংক্রান্তি।

poush

তবে পৌষ সংক্রান্তিকে পুরোপুরি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার বিশেষ সুযোগ নেই। এসময় গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি হয় ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ চিতই, মুগ পুলি, ছিট পিঠা ইত্যাদি। মায়েরা-মেয়েরা রাত জেগে পিঠার গায়ে অলঙ্করণ করেন- ফুল, লতাপাতা, পাখি, মাছের চোখ। সারারাত ধরে চলে এ আয়োজন। একদিকে চুলা থেকে পিঠা ওঠে। অন্য দিকে চলে গরম গরম খাওয়া। এসব পিঠার স্বাদ অতুলনীয়।

পৌষ সংক্রান্তিতে আত্মীয়-স্বজনদেরও নিমন্ত্রণ করে পিঠা খাওয়ানো হয়। বাংলা এই মাসের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন হলো পৌষমেলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তি নিকেতনে পৌষমেলার আয়োজন করতেন। এখনও পৌষমেলায় লোকজ সংস্কৃতির নানা পণ্য দিয়ে স্টল সাজান দোকানিরা। রাখা হয় পিঠা-পায়েস, খেজুরের রস।

ghuri

পুরান ঢাকার পাড়া-মহল্লায় এইদিনে ঘুড়ি উৎসব বেশ প্রসিদ্ধ। বাড়ির ছাদে, মাঠে সকাল থেকে দিনজুড়ে চলে ঘুড়ি উড়ানো, গান-বাজনা আর খাওয়া-দাওয়া। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আতশবাজি, ফানুস উড়ানো এবং বাজি-পটকা ফোটানো।

এদিন রাজধানীর সংস্কৃতিকর্মীরা আয়োজন করে বাংলার শাশ্বত পৌষমেলার। মেলায় পিঠা-পুলির স্টল বসে। চোখের সামনেই চলে পিঠা তৈরি ও বিক্রি। একই সময় লোক আয়োজন থাকে অনুষ্ঠান মঞ্চে। মঞ্চ থেকে জারি, সারি, ভাটিয়ালী গানে তুলে ধরা লোকায়ত সংস্কৃতি। পুঁথি পাঠ, নৃত্য ও নাটকের মাধ্যমে প্রজন্মকে আহ্বান জানানো হয় মাটির কাছাকাছি আসার।

জনপ্রিয়

হাঁসের মৃত্যুহার কমাতে বাকৃবির ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন সিড, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর

পৌষ সংক্রান্তি: বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য

প্রকাশিত ১১:৫৫:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি। বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন এই উৎসব পালন করা হয়। বাংলার প্রাচীন উৎসবগুলোর মধ্যে পৌষ সংক্রান্তি একটি। একে পৌষ পার্বণ বা মকর সংক্রান্তিও বলা হয়।

এক সময় বেশ আয়োজন করে পৌষ সংক্রান্তি উদযাপন করা হতো। বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় এ উপলক্ষে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালনের রীতি প্রচলিত ছিল। কালের বিবর্তনে এখন এই উৎসব অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে। তবুও ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষরা এখনও ঘটা করে উদযাপন করতে পৌষ সংক্রান্তি।

 

poush-shangkranti

পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে বাড়িতে বাড়িতে পিঠা-পুলির আয়োজন করা হয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত পিঠা উৎসবের মধ্যে পৌষ সংক্রান্তি বিশেষ স্থান অধিকার করে নিয়েছে।

মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পিতৃপুরুষ ও বাস্তুদেবতার জন্য তিল কিংবা খেজুর গুড় দিয়ে তিলুয়া তৈরি করে। নতুন চালে তৈরি করা পিঠার অর্ঘ্য দান করে। এ কারণে পৌষ সংক্রান্তির আরেক নাম তিলুয়া সংক্রান্তি বা পিঠা সংক্রান্তি।

poush

তবে পৌষ সংক্রান্তিকে পুরোপুরি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার বিশেষ সুযোগ নেই। এসময় গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি হয় ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ চিতই, মুগ পুলি, ছিট পিঠা ইত্যাদি। মায়েরা-মেয়েরা রাত জেগে পিঠার গায়ে অলঙ্করণ করেন- ফুল, লতাপাতা, পাখি, মাছের চোখ। সারারাত ধরে চলে এ আয়োজন। একদিকে চুলা থেকে পিঠা ওঠে। অন্য দিকে চলে গরম গরম খাওয়া। এসব পিঠার স্বাদ অতুলনীয়।

পৌষ সংক্রান্তিতে আত্মীয়-স্বজনদেরও নিমন্ত্রণ করে পিঠা খাওয়ানো হয়। বাংলা এই মাসের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন হলো পৌষমেলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তি নিকেতনে পৌষমেলার আয়োজন করতেন। এখনও পৌষমেলায় লোকজ সংস্কৃতির নানা পণ্য দিয়ে স্টল সাজান দোকানিরা। রাখা হয় পিঠা-পায়েস, খেজুরের রস।

ghuri

পুরান ঢাকার পাড়া-মহল্লায় এইদিনে ঘুড়ি উৎসব বেশ প্রসিদ্ধ। বাড়ির ছাদে, মাঠে সকাল থেকে দিনজুড়ে চলে ঘুড়ি উড়ানো, গান-বাজনা আর খাওয়া-দাওয়া। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আতশবাজি, ফানুস উড়ানো এবং বাজি-পটকা ফোটানো।

এদিন রাজধানীর সংস্কৃতিকর্মীরা আয়োজন করে বাংলার শাশ্বত পৌষমেলার। মেলায় পিঠা-পুলির স্টল বসে। চোখের সামনেই চলে পিঠা তৈরি ও বিক্রি। একই সময় লোক আয়োজন থাকে অনুষ্ঠান মঞ্চে। মঞ্চ থেকে জারি, সারি, ভাটিয়ালী গানে তুলে ধরা লোকায়ত সংস্কৃতি। পুঁথি পাঠ, নৃত্য ও নাটকের মাধ্যমে প্রজন্মকে আহ্বান জানানো হয় মাটির কাছাকাছি আসার।