মানুষ মানুষের জন্য কথাটা আমাদের সমাজে বহুল পরিচিত। আমরা আসলে মানুষের জন্য কতোটুকু করতে পেরেছি। সমাজের অসহায়, গরীব, দুঃস্থ পথশিশুদের জন্য সমাজের কতজন মানুষ এগিয়ে এসেছি। কত উন্নয়ন সংস্করণ এক্ষেত্রে আমরা পথশিশু ছিন্ন মূল মানুষের জন্য কি করেছি তা প্রশ্নই জাগে।
রাজধানীর বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রায় দেখা যায় ছিন্নমূল মানুষেরা পার্ক, উদ্যান ও রাস্তায় বসবাস করে থাকে। জীর্ণ শীর্ণ ময়লা যুক্ত, নোংরা পোশাকসহ বিভৎস অবস্থায়। তাদের পরিবারের সাথে নেই কোনো ছিটেফোঁটা সম্পর্ক।
পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের এক পথশিশু নয়নের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বয়স ১৩ বছর। সেই কবে থেকে সে এরকম হয়েছে তা ও নিজেও জানে না। ছোট বেলা কে ওকে এখানে রেখে গেছে তা ওর স্মরণে নেই। ভিক্টোরিয়া পার্ক সহ ঢাকার শহরের প্রায় পার্ক ও উদ্যানে ওর আনা গোনা আছে।
ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশের সদরঘাট গামী রোডে কয়েকজন পথশিশুকে দেখতে পাই, দুইটা ছেলে একটা মেয়ে ওরা সবাই শিশু। একটু খেয়াল করে দেখলাম ওরা পলিথিন মুখে দিয়ে শ্বাস নিয়ে আবার মুখ থেকে বের করছে। ওদের জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কি খাও? ওরা বলল, ভাই কিছু না। তখন পাশের এক পথচারী হাবিবুল্লাহ বলেন, এটাকে ড্যান্ডি বলে। এখানকার প্রতিটি শিশু, কিশোর পথশিশুরা এই জিনিসটা খেয়ে থাকে।
পাশেই আরেকটা মেয়েকে দেখলাম চুলগুলো এলোমেলো, উশকো খুশকো, চেহারা মলিন কোলে একটা ছোট শিশু সন্তান নিয়ে বসে আছে। তার পিছনে বসে আরেক মহিলা তার চুলে বেনী তুলে দিচ্ছে। তুলি রঙে পড়া আরেকটি ছোট শিশু পাশে বসেই খেলা করছে।
কিছুক্ষণ পরে তাদের সাথে আসর জমাতে চলে আসে আর কিছু পথ শিশু। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে চলে খুনসুঁটি।
ভিক্টোরিয়া পার্কটি পুরান ঢাকার মানুষের জন্য একটা বিনোদন ও অবসাদের কেন্দ্র। এখানকার মানুষগুলো সকাল বিকাল দুই বেলা হাটাহাটি করে। এসকল পথচারীদের নিকট থেকে এই ছিন্নমূল শিশুরা টাকা নিয়ে তাদের আহার্য নিবারন করে।
ভিক্টোরিয়া পার্কেই জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যাল যাওয়ার গেটের পাশে কয়েকজনকে দেখা যায় কি যেন খাচ্ছে। পরে ওদের দিকে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে কেউ মুখ খুলতে চাচ্ছিল না। পরে এক পথচারী হাসান নামের একজন বলেন, এখানে প্রায়ই ওরা বিড়ি সিকারেট সহ মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে।
