বলিউড অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালার মৃত্যু নিয়ে নানান আলোচনা চলছেন। অভিনেত্রী গত ২৭ জুন মুম্বাইয়ের আন্ধেরিতে নিজ বাসভবনে আকস্মিকভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে বেলভিউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। কেন মাত্র ৪২ বছর বয়সে সুস্থ শেফালি এভাবে চলে গেল সেটাই ভাবাচ্ছে তার ভক্তদের। মুম্বাই পুলিশও এ ঘটনার তদন্ত করছে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে কেমন ছিল শেফালির জীবনের শেষ ২৪ ঘণ্টা। মৃত্যুর দিন সকালে শেফালি নিজের বাড়িতে পূজা করেছিলেন সে কারণে উপোস রেখেছিলেন তাই খাওয়া-দাওয়া বন্ধ ছিল। আর খালি পেটে থাকা অবস্থাতেই রাতে তিনি অ্যান্টি-এজিং ওষুধ এবং ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য গ্লুটাথায়ন ইনজেকশন নেন। রাত সাড়ে ১০টায় আচমকা শরীর কাঁপতে শুরু করে ও তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর শেফালিকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে। চিকিৎসকদের ধারণা খালি পেটে অ্যান্টি-এজিং ওষুধ এবং ইনজেকশনের প্রভাবেই তার শরীরে রক্তচাপ কমে যায় সেই সঙ্গে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই অভিনেত্রী অজ্ঞান হয়ে যান। আর সে অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রীর।
অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় কুপার হাসপাতালে। তদন্তের জন্য ময়নাতদন্তের ভিডিও ধারণ করার বিষয়টি জানিয়েছে পুলিশ। ভিসেরা সংরক্ষণ করে কেমিক্যাল অ্যানালাইসিসের জন্য কালীনা ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
শেফালির বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে অ্যান্টি-এজিং ওষুধের দুটি বাক্স, গ্লুটাথায়ন ইনজেকশন এবং মাল্টি ভিটামিন ও কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট। ফরেনসিক দল তার পোশাক, বিছানার চাদর ইত্যাদিও সংগ্রহ করেছে পরীক্ষার জন্য। তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, উপোস অবস্থায় উচ্চমাত্রার ওষুধ গ্রহণে রক্তচাপ মারাত্মকভাবে কমে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হৃদ্রোগে মৃত্যু) হতে পারে।
অন্যদিকে শেফালির মৃত্যু রহস্য জানতে মোট ১৪ জনের জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ, যার মধ্যে আছেন শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগী, পরিবারের সদস্য, গৃহকর্মী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সকলেই জানিয়েছেন, এই মৃত্যুতে কোনো ষড়যন্ত্র বা সন্দেহজনক কিছু ছিল না। তবে চূড়ান্ত পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট আসতে আরও ২-৩ দিন লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভিসেরা বিশ্লেষণ শেষ হতে সময় লাগতে পারে ৫০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত। তদন্ত এখনো চলমান।
